মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

কবিতায় -- প্রথম দশক







                         প্রথম দশকের  কবি - ১  





তাপস দাস

কম্পাঙ্ক - ৩


একটা গাছ একদিন হঠাৎ আমার ভেতরে ঢুকে পড়ল 
গোমড়ামুখো হয়ে রইল দীর্ঘক্ষণ 
বুঝলামসে আমার মতো করে কথা বলতে চায়
তারমুখে শব্দ তুলে দিইসেও দ্যায়
সে কথা বলেআমি ইতিহাস হয়ে পড়ে থাকি
পৃথিবীর অসুখ মুছে যেতে থাকে
পাখির সাথে মা ডাক বিনিময় করতে থাকে মানুষ...




পীযূষ সরকার

শূন্যতার মধু


 সব কবিতা ,সব গান ,সব প্রেমের পর  হাড় হিম থমথমে যে জীবন
তার কাছে আজ ফাঁস করে দিই-
আমি অর্ধেক গাছ অর্ধেক কুঠার

বেঁচে থাকার ইচ্ছে যেমন ফুরিয়ে যাচ্ছে দিন দিন
মৃত্যুভয়ও বাড়ছে
শূন্যতার মৌমাছি চাক বানাচ্ছে বুকে
আমি সেই শূন্যতার মধু খাচ্ছি
মোম দিয়ে বানাচ্ছি তোমার মুখ হে প্রাক্তন
আজ বুঝি ,প্রেমের চেয়ে প্রত্যাখ্যান কত হিতকর
মিলনের চেয়ে বিরহ কত ক্লাসিক

কেন যে কোমড়ে তাবিজ বেঁধেছিলাম সেদিন
চোখ বন্ধ করে খেয়েছিলাম মাটিপড়া মন্ত্রপূত মদ
সামান্য ভালোবাসার লোভে ঢুকে পড়েছিলাম
ভয়ঙ্কর কাপালিকের ডেরায় ,বিষণ্ণ শবসাধানায়
কেন যে ছাইয়ের মতো তোমাকেই শরীরে মেখেছি

আমি খুব ভালো নেই কিন্তু বেঁচে আছি আজকাল

নায়েব আলী টেপুর মতো লো ভলিউম-এ যাচ্ছে জীবন




গৌরব চক্রবর্তী

ছায়াগান, পিতৃপক্ষে জাগো 

 সফেদ কাপড় দিয়ে ঢাকা তোমার ইহকাল
অধরা হয়ে রইল আমাদের
স্মৃতির ভেতরে
মেঘ ও মদিরার মতো কোনও মোহ
মাঝে মাঝে জেগে ওঠে বলে
আমাদের খোলা চোখে আলো-ছায়া লাগে
খই ও খেউড় ওড়ে
ভাঙা পয়সার সাথে ধূপে ভেসে যায় হরিনাম
আপাত মন্থর এই জীবনের যে কোনও বাতিকে
সহসাই মনে পড়ে যাবে--
                     
তুমিও তো ছিলে একদিন...




অনিরুদ্ধ দেব 

মানচিত্র


 ক 

ঈশ্বরের নগ্ন শরীর জুড়ে ছড়িয়ে আছে আততায়ী অগুরুর গন্ধ

কখনও কখনও কমলালেবুর খোসা ছাড়াতে গিয়ে নিজেদের দুর্যোধন বলে মনে হয়।


প্রতিদিন মুখোশ বদলাতে বদলাতে ভুলে যাই নিজের চেহারার মানচিত্র

বুকের ওপর আঁশটে গন্ধের শ্যাওলা গজিয়ে উঠছে নিত্য


কতটা ধূপ পোড়ালে ঈশ্বর ছোঁয়া যায় জানি না

মেরুদন্ড থেকে সত্তা ছিঁড়ে নিচ্ছে জাদুকর।


ক্ষুধার্ত পেট জানেই না মোড়ক উন্মোচন


মহারাণীর শাড়ি জুড়ে ঝাঁ চকচকে উন্নয়নের বিজ্ঞাপন। 


বিপ্লবসরকার
দুটি কবিতা

 
ছাতা

কিছু কিছু দূরত্বের মাঝে একটা গল্প বড়
হতে থাকে

মূক...

আমি সেই গল্পের ভিতর জমা রাখি আজ
ঠোঁট

একদিন খুব ঝড় হবে। হবে বৃষ্টিও
নির্ভুল

মনে পড়বে পুরনো ছাতার মতো---
                                                 
এই বুক


সহজ

কতদূর অনিবার্য সে চাওয়া?

যাহা যত দূর, তাহা তত নিকট

আমরা ভুলে যাই প্রতিটা দূরত্বের এক গোপন নিকট
আছে। নির্দিষ্ট সে চাবিকাঠি প্রেমিক মাত্রই জানে

তবুও কেউ কেউ হরিণের চিকন ঠ্যাং দেখে
ফুল ছেঁড়ার কথা ভাবে

অথচ গভীর রাতে
ঢাল পেলেই নদী সহজ হয়ে ওঠে



সপ্তর্ষি বনিক


সাময়িক ও সময় - ২


গণতন্ত্রের উপর গুলির চিহ্ন
রাষ্ট্র খোঁজে দেশদ্রোহী
ধর্ম খোঁজে দেশপ্রেমী

রাষ্ট্র ও ধর্ম
দু দিকের রাস্তা

ভাগ করেই গুলি
দ্বেষ তৈরি করে মৃতদেহ...




বিকাশ দাস (বিল্টু)

ঘোর টু প্রেতাত্মা
    


আমার প্রেতাত্মা কি তবে আমার উপরেই ভর করে?
     
অমাবস্যার এক নির্জন রাতে শুয়ে থাকা আমার-আমিকে খুঁজে নিতে হয়!

কোথায় যায়? -জেগে থাকি!
                       
তথাপি মনে হয় -
কিসের নেশায়,কিসের আশায়,এই জপ- তপ করা
     
ভ্রম নয়!
             
ঘুম নয় -স্বপ্নও নয়
                               
বাস্তব!

তবে কি সত্যিই আমি কবিতার ঘোরে আছি?
             
প্রশ্ন করেও উত্তর থেকে যায়

আঃকি অদ্ভুত আধারে প্রেতাত্মারা হুমড়ি খায়!



নীলাদ্রি দেব 

শূন্য 


অসময়ে আলো বলে কিছু নেই 
পুরোটাই ক্ষতের মতো 
তবুও হাড় ও মজ্জার মাঝে 
                       স্পষ্ট আঁতাত 
নিজের ভেতরে থাকা গোপন সিঁড়িটি 
    খুঁজে পাওয়া এতটা কঠিন !
এরপরও 
পথ ও শেষ, শুরু খুঁজে যাই 
  আমার ছাঁচেই গড়া পাগলের সাথে 
তুমি শুধু আলোর নিশান 
তুমি শুধু হাইমাস্ট বাতি 
তুমি কে? আমিই বা কে
বুঝতে পারিনি এই অভাগার দেশে 
বিরতিপর্বের সাথে বাকিসব মানিয়ে নিলেও 
আজকাল দেহ ও পোশাকের মাঝে পরিচিত শূন্যকে আঁকি


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উৎসব সংখ্যা -২০২৩ প্রচ্ছদ শিল্পী - রিন্টু কার্যী সম্পাদক- শৌভিক বনিক

  উৎসব সংখ্যা -২০২৩ প্রচ্ছদ শিল্পী - রিন্টু কার্যী সম্পাদক- শৌভিক বণিক উৎসবের আর মাত্র কয়েকটা দিন, একদম হাতে গোনা।  আর উৎসব  সংখ্যা ছাড়া উৎ...