মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

কবিতায় -- আশি দশক



                                                আশি দশকের কবি 




সন্তোষ সিংহ 

দাগ

একটু একটু করে তুমি সরে যাচ্ছ
আর বর্ষা নামছে একটু একটু করে
আ্যান্টেনায় জমে উঠছে বিষণ্ণ ঘুরির মতো মেঘ
                               
ভাঙা        ভাঙা  
তোমার পায়ের দাগ ঢেকে রাখছে বিষাদের জল
স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি
একটু একটু করে তুমি কী গভীর স্বচ্ছ হয়ে উঠছ
                           
নেগেটিভ  ফটো -প্লেট থেকে
আর থান -পরা রাঙাদির কথা মনে পড়ছে
                                 
বেশি     বেশি
স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি       ফ্রেমের বাইরে
                             
ভেসে যাচ্ছে তোমার চুল চোখ গলা
আর তোমার পায়ের দাগকে  ঘিরে  বিষাদের জল
                               
কত  স্মৃতির   জটলা.......



সমর দেব 

ব্যাঙের গল্প

সে তবে গল্পের ব্যাঙ, মিথের পেছনে কোনও সত্য ছিল না!

একশো বছর ধরে নির্বোধের মতো যুঝে যুঝে এনার্জি ক্ষয়েছো
প্রতিরোধহীন তাপ সয়ে সয়ে ভেবেছিলে অনায়াস জীবন কাটাবে
তারপর একদিন জ্বলে ওঠে তুমুল খাণ্ডববন, লেলিহান শিখা
ঘর পোড়ে গাছ পোড়ে পুড়ে যায় মাঠঘাট ভিটেমাটি উপাসনালয়

তক্ষক ছিল বলে তবুও তো কেটে গেছে দিব্যি অনেক বছর
তখনও আগুন ছিল, স্তূপীকৃত জমে ছিল সহজ দাহ্য সব
সেই তাপে নির্বিকার ছিলে ঝুপ করে লাফাতে পারোনি
আত্মঘাতী ব্যাঙ এইবার চিত্রনাট্য শেষ হবে সমূহ বিনাশে

তবুও বাতাস বয় ওড়ে শান্তির পায়রার মতো কয়েকটা ফড়িং
গেরস্থ বাড়ির গাছে ঝুলে থাকা দড়ি কেঁপে ওঠে মন্দ বাতাসে
ধু ধু মাঠে পোড়া মাংসের ঘ্রাণ বুক ভরে টেনে নেয় কারা
এইখানে সাগরের তীরভূমি ছুঁয়ে শুয়ে থাকে নিথর তিমিরা




সঞ্চিতা দাশ চাকী 

আমি ঋদ্ধ হব

যদি চাও নিবিড় করে বাঁচাশুদ্ধ পরিত্রাণ ;
 
আরো কাছে এসো।
চুপচাপ দাও সেই অনিবার্য আগুন
ঘরোয়া দুঃখগুলো পড়ে থাক পাশে 
প্রানের পরশে উথলে ওঠা নদীজল তুমি নাও 
বুকের কপাট খুলে মাঝরাতে বাঁধভাঙা ঢেউ
অন্ধকার ভেদ করে ছুটে যাক শব্দবান 
বাতাসে ভিজে গেছে অভিমানী মেঘ 
উৎসমুখ থেকে আনো স্মৃতি-গন্ধ
অশেষ গহনআমি স্নান করে ঋদ্ধ হই।




উত্তম চৌধুরী 

ইচ্ছে কণাগুলি

কথার ভেতর একটি মসৃণ রাস্তা তৈরি হচ্ছে
যা খাদের কিনার ধরে তোমাকে পাহাড় শীর্ষে পৌঁছে দিতে পারে।

মনের ভেতর একটি কামরাঙা গাছ
পাকা রসালো হলদে ফল ছায়াচ্ছন্ন  বিকেলে 
অলৌকিক গ্রামীণ আবেশ নিয়ে আসে।

গাঢ় অনুভবের ভেতর তৈরি হচ্ছে সূক্ষ্ম জাল 
যেখানে আমাদের ইচ্ছেক্ণাগুলো আটকে থেকে 
হীরকখণ্ডে মতো দ্যুতি ছড়ায়

ভোরের স্বপ্নের ভেতর বেড়ে উঠছে
অজস্র আকাশকুসুম, রামধনুচোখ
আর গোলাপী নদীর মতো দীর্ঘ রিবন
যা মায়াময় আলোর  বুকে টেনে নিয়ে যায়।



মধুমিতা চক্রবর্তী 

এইসব গল্পগাছা

আলোও চুরি হয়ে যায়,ভালোও...
কিছু অস্পৃশ্য সময় ছুঁয়ে দেয় জীর্ণ অজিন,
সেখানে পুজোয় বসার কথা ছিলো....তবুয়ো
বিশুদ্ধ জল খুঁজে পেতে আচমন সেরে নেওয়া গেল
এই ভন্ডামী মেখেই দিন গুজরান, রাত কাবার.....


পিপাসার্ত হলেই নদী এগিয়ে আসবে কেন ভাবো
তার কাছে তোমারও তো যাওয়া হতে পারে
আরও কিছু বেনোজল পেরিয়ে, অনায়াস...

গ্লোসাইনের ঝকঝকে আলোর নীচে স্বপ্ন বন্ধক রেখে,
রাস্তা গুটোতে গুটোতে ঘরে ফিরে ঘুমিয়ে পড়ি......



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উৎসব সংখ্যা -২০২৩ প্রচ্ছদ শিল্পী - রিন্টু কার্যী সম্পাদক- শৌভিক বনিক

  উৎসব সংখ্যা -২০২৩ প্রচ্ছদ শিল্পী - রিন্টু কার্যী সম্পাদক- শৌভিক বণিক উৎসবের আর মাত্র কয়েকটা দিন, একদম হাতে গোনা।  আর উৎসব  সংখ্যা ছাড়া উৎ...