মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০

আলোকপাত প্রমোদ বসু-র কবিতা - সুদীপ্ত মাজি




'ছায়া রেখে, ছায়ার বিশ্রামে শুধু যাই' : প্রমোদ বসু- কবিতা     




রুক্ষ বাস্তবতা যাঁর কবিতার অন্তরে গিয়ে রূপান্তরিত হয় এক স্বগত কথনে --
তিনি, সত্তরের প্রমোদ বসু। অকালে জীবন কবিতা থেকে আত্মনির্বাসন 
নেওয়া এক নির্জন অভিমানী কবি তিনি। হৃদয়ের গভীরতম শুভময়তার বোধ 
দিয়ে তিনি নির্মাণ করে তুলতে চান তাঁর 
কবিতার স্বর। আহত ডানার বেদনাসঙ্গীত 
নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা 'একটা গাছ' তো আসলে 
মানুষেরই রূপকল্প। প্রকৃত নিমগ্নতায় 
তিনি লিখে রাখতে পারেন :

"
কত দূরে যাই? নাকি,খুব দূরে নয়?
 
যেতে হয়, যাই?
কারা ডাকে?
ছায়ার মলাট খুলে কারা ডাকে?
তেমন জানি না।আমি খুব জানি না কিছুই
যেতে হবে, যাই।
যেতে হবে, ছায়া রেখে,
ছায়ার বিশ্রামে শুধু যাই। "
          
                        (
একটা গাছ, একটা গাছ)

ছাই, পোড়াকাঠ, রাত্রি, দীর্ঘশ্বাস, পুড়ে যাওয়া প্রেম --- 
সব মিলিয়ে তাঁর দগ্ধ হৃদয়ের স্বগত অনেক সময়ে গেরুয়ারঙের একটা বৈরাগ্যকেও 
মিলিয়ে দিতে চায় তাঁর কবিতার অন্তর্বাসে। ঈশ্বরমনস্ক প্রমোদের কবিতায় 
আধ্যাত্মিকতার রূপ আভরণহীন। দগ্ধ দুপুরের সমূহ প্রদাহ আর আত্মসমর্পণের 
রিক্ততার বৈভবে বহু সময়েই স্বতন্ত্র হয়ে উঠতে পেরেছে তাঁর উচ্চারণ। বেদনার্দ্র 
চৈতন্যের এক আন্তরিক উন্মোচনের সামান্য অংশ আমরা পড়ে দেখতে পারি এখানে :

"
তুমি এনে দিলে, তাই এই শূন্য হাতে
ফিরি নাথ ভিতরে-বাহিরে,
অথচ বলি না।
বলি না কাউকে, কীভাবে চিত্তহীন বিত্তহীন পতনোন্মুখ আলো
অন্ধকারে, আর
কীভাবেই বা এই পথে, ওই পথে, সেই পথে
সনাতনি সীমিত কৌশল
অপবিত্র বেশে। "
       
           (
তুমি এনে দিলে, অন্ধকারের বন্ধু)

জীবনের শূন্যগর্ভ অন্ধকারের মধ্যে থাকা আলো অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় ছেঁকে তুলতে 
চাওয়ার এক নির্বিকল্প প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে যেতে শেষ পর্যন্ত কেন যে 
অন্ধকারেরই বন্ধুত্বকে স্বীকার করে নিলেন কবি প্রমোদ! আমাদের স্মৃতিতে জাগতে 
পারেন জীবনানন্দ! তাঁর 'বোধ ' কিংবা 'আট বছর আগের একদিন '-এর অভিষঙ্গসহ! হয়তো 
আত্মহত্যাই এই অবস্থায় আত্মসম্মান রক্ষার একমাত্র ব্যারিকেড হয়ে ওঠে শেষাবধি
আমরা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করি, কবি প্রমোদ বসু- কত না কবিতায় ধারাবাহিক ভাবে 
অক্ষরবন্দি হয়ে থেকে গেছে অনিবার্য   প্রস্থানেরই এক আশ্চর্য মুসাবিদা!

আলোকপাত প্রমোদ বসু-র কবিতা - সুদীপ্ত মাজি




'ছায়া রেখে, ছায়ার বিশ্রামে শুধু যাই' : প্রমোদ বসু- কবিতা     




রুক্ষ বাস্তবতা যাঁর কবিতার অন্তরে গিয়ে রূপান্তরিত হয় এক স্বগত কথনে --
তিনি, সত্তরের প্রমোদ বসু। অকালে জীবন কবিতা থেকে আত্মনির্বাসন 
নেওয়া এক নির্জন অভিমানী কবি তিনি। হৃদয়ের গভীরতম শুভময়তার বোধ 
দিয়ে তিনি নির্মাণ করে তুলতে চান তাঁর 
কবিতার স্বর। আহত ডানার বেদনাসঙ্গীত 
নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা 'একটা গাছ' তো আসলে 
মানুষেরই রূপকল্প। প্রকৃত নিমগ্নতায় 
তিনি লিখে রাখতে পারেন :

"
কত দূরে যাই? নাকি,খুব দূরে নয়?
 
যেতে হয়, যাই?
কারা ডাকে?
ছায়ার মলাট খুলে কারা ডাকে?
তেমন জানি না।আমি খুব জানি না কিছুই
যেতে হবে, যাই।
যেতে হবে, ছায়া রেখে,
ছায়ার বিশ্রামে শুধু যাই। "
           
                        (
একটা গাছ, একটা গাছ)

ছাই, পোড়াকাঠ, রাত্রি, দীর্ঘশ্বাস, পুড়ে যাওয়া প্রেম --- 
সব মিলিয়ে তাঁর দগ্ধ হৃদয়ের স্বগত অনেক সময়ে গেরুয়ারঙের একটা বৈরাগ্যকেও 
মিলিয়ে দিতে চায় তাঁর কবিতার অন্তর্বাসে। ঈশ্বরমনস্ক প্রমোদের কবিতায় 
আধ্যাত্মিকতার রূপ আভরণহীন। দগ্ধ দুপুরের সমূহ প্রদাহ আর আত্মসমর্পণের 
রিক্ততার বৈভবে বহু সময়েই স্বতন্ত্র হয়ে উঠতে পেরেছে তাঁর উচ্চারণ। বেদনার্দ্র 
চৈতন্যের এক আন্তরিক উন্মোচনের সামান্য অংশ আমরা পড়ে দেখতে পারি এখানে :

"
তুমি এনে দিলে, তাই এই শূন্য হাতে
ফিরি নাথ ভিতরে-বাহিরে,
অথচ বলি না।
বলি না কাউকে, কীভাবে চিত্তহীন বিত্তহীন পতনোন্মুখ আলো
অন্ধকারে, আর
কীভাবেই বা এই পথে, ওই পথে, সেই পথে
সনাতনি সীমিত কৌশল
অপবিত্র বেশে। "
        
           (
তুমি এনে দিলে, অন্ধকারের বন্ধু)

জীবনের শূন্যগর্ভ অন্ধকারের মধ্যে থাকা আলো অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় ছেঁকে তুলতে 
চাওয়ার এক নির্বিকল্প প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে যেতে শেষ পর্যন্ত কেন যে 
অন্ধকারেরই বন্ধুত্বকে স্বীকার করে নিলেন কবি প্রমোদ! আমাদের স্মৃতিতে জাগতে 
পারেন জীবনানন্দ! তাঁর 'বোধ ' কিংবা 'আট বছর আগের একদিন '-এর অভিষঙ্গসহ! হয়তো 
আত্মহত্যাই এই অবস্থায় আত্মসম্মান রক্ষার একমাত্র ব্যারিকেড হয়ে ওঠে শেষাবধি
আমরা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করি, কবি প্রমোদ বসু- কত না কবিতায় ধারাবাহিক ভাবে 
অক্ষরবন্দি হয়ে থেকে গেছে অনিবার্য   প্রস্থানেরই এক আশ্চর্য মুসাবিদা!

উৎসব সংখ্যা -২০২৩ প্রচ্ছদ শিল্পী - রিন্টু কার্যী সম্পাদক- শৌভিক বনিক

  উৎসব সংখ্যা -২০২৩ প্রচ্ছদ শিল্পী - রিন্টু কার্যী সম্পাদক- শৌভিক বণিক উৎসবের আর মাত্র কয়েকটা দিন, একদম হাতে গোনা।  আর উৎসব  সংখ্যা ছাড়া উৎ...