শেষ বর্ষা
মেঘ ফুরোচ্ছে। একটা আত্মতৃপ্তি লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মুখ ভার করছে স্মৃতিরা। ফুটন্ত ভাতে নোনাজল থৈথৈ করছে। রেডিও তে তখন গম্ভীর গলায় ' শনিবারের বার বেলা' বুকের ভেতর মোচড় দিচ্ছে। পরক্ষণেই হারিয়ে যায় 'তুষারমালা' -র রূপকথার গল্পে। ঐ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করতো। কে বেশি সুন্দরী আমার মা, নাকি...!
এক অদৃশ্য সুতো জড়িয়ে আছে। যেখানে জমা থাকে অন্ধকার। হু হু করে ছুটে আসে একদল মানুষ । যাদের হাতে লাঠি, দা, তলোয়ার, পিস্তলের গুলি ছুটছে। লক্ষ্য অলক্ষ্য ভেদ করছে। অথচ কিছুদিন আগেই যারা জাত পাতের তোয়াক্কা না করে আচার শেয়ার করছিল। এক পায়ে চুঁ কিৎ কিৎ গোল্লাছুট খেলছিল। কিছু ছেলেরা টায়ারে লাঠি ঠেলতে ঠেলতে এগিয়ে গেছিলো। আজ ভাগ হয়েছে পথ। যদিও গন্তব্য জানা নেই। ঘর বাড়ির থেকে একই আর্তি। কীসের আর্তি ছিল? ১৪৪ ধারায় যখন গ্রাম কাঁপছে! মাস ঘুরতে না ঘুরতেই আবার তো আগের মতই বৃহস্পতিবার রবিবার হাট বসছে। পাঁচু, সাগর, বিমল, কমল রফিক, মহিদুল, শামসুল সবাই তো বাজারে একসাথে ব্যাগ ভরছে। সবাই তো পাশাপাশি বসে পিয়াজ আলু মাছের দর তুলছে। সেদিন তবে কেন রক্তে পিচ্ছিল হয়েছিল পথ? বারুদের গন্ধে ভারী হয়েছিল হাওয়া? জানা নেই! এসবের উত্তর কেউ খোঁজে না। সময়ের সাথে বিলুপ্ত হয়। আমরাও বিলুপ্তির অবগাহনে নিমজ্জিত হচ্ছি। তবু তো লোভ থেকে যায় জন্মের। যাকে পার করে চলি এক মহাশূন্যের গভীরে। যেখানে অক্সিজেন ফুরিয়ে যায়। ফুঁটো হয়ে যায় হার্ট। তবু তর্জনী কামড়ে দিলে দুর্বল কথারা ঝরে পড়ে। তুলে রাখে একটা ছোট্ট মেয়ে। তার জানালায় দুপুর গলে যায় 'চকলেট ক্রীম সোলজার' -এর অপেক্ষায়। আসলে শব্দের মধ্যে কোন বিদ্বেষ নেই।শুধু দৃশ্যের মধ্যে ভরাট হতে থাকে নদী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন