পথ, পথিক ও ছায়াগাছ
এক.
যেভাবে বিন্দু থেকে বিন্দু রেখায় জুড়ে পথ স্পষ্ট হয়ে ওঠে, বাকি সবও. আল বরাবর হেঁটে যাই. চতুর্ভুজের প্রতিটি কোণ যে/ যে যে বিন্দুকে মান্যতা দেয়, তাদের অদৃশ্য আঁতাত স্বচ্ছ হতে শুরু করে. হেঁটে যেতে পারলেই পথ. বিন্দু থেকে বিন্দুতে গ্রাফাইট রঙে রেখা. দুটো রেখা সমান্তরালে. দেখেছি, সূর্যের অবস্থান প্রতিটি সমান্তরাল রেখার জন্য দায়ী. একই ভাবে হয়তো পথের প্রস্থ এঁকেছিল সদ্য আঁকতে শেখা কিশোর. ক্রমে প্রস্থই দৈর্ঘ্য হয়ে ওঠে. ফোরলেনের পাশে যে লাল সাদা রঙের টাওয়ার, পথই তো. উলম্ব অবস্থানের পাশে সূর্যের ঢলে যাওয়া মনোক্রোমে লাল টিপ গেঁথে দেবার মতই. কিন্তু এত পরস্পরবিরোধী আর্তনাদ উঠে আসছে, হাঁটু মুড়ে বসি. চুপচাপ বসি.
দুই.
রেলপথ তৈরির পর থেকে বিবর্তনে বিবর্তনে কার্বন ডেটিং লেগে আছে. এরপরও সমান্তরাল দুটো রেখা ওভারল্যাপ করেনি. দূরত্ব বজায় রেখেছে, নির্মেদ ও নির্দিষ্ট. দেখেছি. রেখা বরাবর এগিয়ে, পিছিয়ে গেছি. কিন্তু স্থির দৃষ্টি রাখিনি. যে দৃষ্টির মুখোমুখি নির্ভেজাল আমি কিংবা আমার মত কেউ. যে আমার আকার, সূত্র ও সমীকরণ মধ্যবর্তী রেখার দুপাশে সমান ও সামঞ্জস্যপূর্ণ. মিলে যাচ্ছে অঙ্ক. আসলে সব গিটই খুলে যায়. সব সুতোর. তাহলে ভাগশেষ কেন? রহস্য? এসব না থাকলে সমস্যা তৈরি হত না, টেনশন. বেঁচে থাকার খিদে. এত সব জেনে ও না জেনে যা পড়ে থাকে, তাকে অস্বীকার করা যায় না. সেটি সত্য. খুব কাছে গিয়ে নেড়ে দেখলে সমস্ত মিথ্যেই চূড়ান্ততম সত্য.
তিন.
যানবাহন বা গণপরিবহন বাদ দিন. বসে থাকলে এবার উঠে দাঁড়াতে হবে. নাক বরাবর হাঁটতে হবে. কোথায় স্টেশন, কোথায় বাসস্টপ... এসব যেহেতু নিষ্ক্রিয়, অতএব চূড়ান্ত গন্তব্যের দিকে এগোতে হবে. যা কিনা বিভিন্ন রকম দুর্ঘটনার পেটে. ছুরি গেঁথে দিলে গলগল বেরিয়ে আসছে জীবন. মানে বেঁচে থাকা. মত, পথ ও এ বিষয়ে মনীষীদের বাক্যবন্ধ বন্ধ দরজার উপর সেঁটে সন্ধেতে ধূপ দেয় গেরস্থালি স্ত্রী-পুরুষ. তাই এর কোনও শর্টকাট নেই. রাস্তা অনেক থাকলেও বোধিগাছের চারা বনদপ্তর সব রাস্তার পাশে লাগায়নি. লাগালেও ছাগলের পেটে. এরপরও ভাগ্য বলছি না. কোনও না কোনও পথে পথিক সেই গাছের ছায়া খুঁজে পাবেন. গন্তব্য পেরিয়ে সবাই যেখানে সরাইখানা খোঁজে, বিশ্বাস করুন, সেখানে কোনো গাছ নেই. থাকলেও কেউ দেখেনি. তবে পথ, পথিক ও ছায়াগাছের মাঝে অভিকেন্দ্র বল আছে.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন