লাল ডায়েরি
বাবলি সাহা সূত্রধর
কুয়াশা মাখা চাঁদ ভেসে আছে
সাদা ব্রীজ বরাবর
হিমায়িত জোছনা উপচে পড়ে
দিগন্ত জুড়ে অথবা আমাদের উঠোনে।
প্রায় এক যুগ হলো
বাবা পুনর্জন্মের অংশীদার!
বইয়ের ভাঁজে চশমা এবং
প্রতিশ্রুতি গোছানো আছে এখনও।
একটা জীবন লিখেছিল বাবা
ছোট্ট লাল ডায়েরিতে,
প্রত্যাশিত যা কিছু গোপনীয়তা
ক্রমাগত জাল বুনে চলেছে
ডায়েরির গোপন ঘরে ;
আমাদের উঠোন কিংবা দিগন্ত জুড়ে
এখন শুধু জোছনা মাখা ডায়েরি।
অদ্রি-৭১
কৃষ্ণ দাস
মনে করো,
দশ বছর গুহাজীবন কাটাচ্ছি....
ধীরে ধীরে ভাষা ভুলছি,
অভ্যাস ভুলছি,
যাপন ভুলছি,
নীরবতা ধুয়ে দিচ্ছে বিগত জন্মের পাপ।
আমি এখন মানুষ নই,
এই পৃথিবীর হাজারটা গাছের মত গাছ....।
আমার গায়ে পাখি বাসা বেঁধেছে, ক্লোরোফিল তৈরি হচ্ছে শরীরে।
ঠায় বসে থাকতে পারি,
আমার চোখকে ফাঁকি দিয়ে সূর্য উঠতে বা ডুবতে পারে না।
আকাশের চাঁদ জানে..
কেউ না রাখুক তাকে মনে।
আমি তার পাশে আছি, থাকবো।
আমার আকাশে মৃত নক্ষত্রের ছড়াছড়ি।
একটি ষোড়শী মেয়ে কষ্ট পেলে,
তার চোখের জলে মৃত নক্ষত্র গলে যায়।
নক্ষত্র মরে গেলে আর নক্ষত্র থাকে না অদ্রি,
মৃত নক্ষত্রের নীচে শুয়ে তবুও....
তোমাকে ভুলতে চেয়ে বার বার তোমাকেই মুখোস্ত করে চলছি...
এক পায় দাঁড়িয়ে,
গাছের মত,
এ আমার আমৃত্যু বৃক্ষ-সাধনা।
উত্তরাধিকার
প্রদীপ্তা সরকার বড়ুয়া
ভোরের আলো ছুঁয়ে ,
সন্ধ্যার রাধাচূড়া জড়িয়ে,
রাতের জোৎস্না গায়ে মেখে ;
আভিমানের কোলে মাথা রেখে বৃষ্টি পড়েছিল-
অঝোরে |
হৃদপিন্ড জানে সেই ভিজে যাওয়ার শব্দ |
শুন্য আদালত ;
দলিলে শুধু লেখা ,
ভালোবাসার উত্তরাধিকার ||
আগুন
সোমা দে
ছাইয়ের গাদার গভীরে জমতে থাকা
দীর্ঘ দিনের অভিমান কিংবা অভিযোগ
জ্বলে উঠছে রাত্রির গুহায়
দাবানল বুকে নিয়ে স্থির দাঁড়িয়ে আছে
পাহাড়
কেমন যেন বাবার মতো দেখতে !
আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণে অশ্রাব্য শব্দের লাভা
ছড়িয়ে যায় ভেতর ঘর থেকে বারান্দায়
এতো ভয়ানক হয়ে উঠছো কেন মা ?
বিষাক্ত হয়ে গেল সম্পর্কের জল মাটি বায়ু
আজ শুধু আগুন আর আগুন . . .
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন