শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩

প্রথম দশকের কবি উদয় সাহা - র মুক্ত গদ্য "ছাই ও ছায়ার পরবর্তী "



 ছাই ও ছায়ার পরবর্তী 




এক.


পীতবর্ণ সকাল। সারা শরীরে পান্ডু রঙ। একটা বাসি- বাসি ভাব৷ ঝড় এসে ছিড়ে খুঁড়ে লুট করেছে ভোরের লাজ৷ সারা রাত খুঁড়েছে৷ সারা রাত ছিঁড়েছে। প্রেম হারিয়েছে ঠোঁট। ঠোঁট মেখেছে প্রতিক্রিয়ার প্রলেপ৷ স্নান করে ধোঁয়া বারমুডা পরি৷ মন তখনও অন্ধকার মেখে ন্যাংটো হয়ে গড়াগড়ি খায় মেঝেতে ; কখনও বিছানায়। কালো নিশানের কথা ভেবে ভেবে জাত খোয়াচ্ছে কলম৷ কারা যেন শেষকৃত্য সেরে বাড়ি ফিরেছে আর গামছা থেকে ধুয়ে ফেলেছে গতরাতের শবগন্ধ। সব ঘরা পূর্ণ হলে অক্ষরে অক্ষরে বিষন্ন জ্যামিতি। কবিতা এক বিপন্ন জংশন। অতীত আর স্বপ্নের মাঝে দুর্বল সাঁকো৷ 

 দুই.

 সামান্য রোদ স্প্রে করেছিল কেউ। খুব করে কাছে চাইলাম রূপের বিথার -- রোদ গন্ধ৷ রোদ গন্ধের জন্য একটা আসন৷ জেগে থাকা শব্দহীন বালব্ থেকে নেমে আসে ঠান্ডা আলো৷ কোথাও-বা ফোঁটায় ফোঁটায় জল পড়ার ছন্দ৷ রাতচরা পাখির ডানায় কুয়াশার আবর্ত স্যাঁতসেঁতে গন্ধটা সাময়িক দূর হয় ঠাকুরপূজার ধূপকাঠিতে। কিন্তু মন? ভোর হয়ে গেছে ভেবে ভুল করে অলৌকিক ডেকে ওঠে পাখি৷ তারপর আবার নৈঃশব্দ্য৷ নদী তো ঘুমের ভেতরেও চলে, থামতে জানে না৷ তাই মৃত্যুর পরোয়ানার উল্টোপিঠে পরপারের আলোর বিজ্ঞাপন। তবু চোখে বালি৷ গতরাতের প্রিয় কবির কবিতা ম্লান হয়েছে কাঁচ-ভাঙা আলোয়। আমি ডায়েরির পৃষ্ঠায় ঢেউ আঁকলাম।পেছনে দুটো পাহাড়। পহরে পহরে আকাশ ভাঙে অটল দেউল। 


তিন.

ছায়ার অন্ধকারে ডুবে থাকা একটি বুকফাটা উদাসীন পথ৷ পথ যেন সময়সরণি বেয়ে চলে গেছে ফাঁসির ঘাট থেকে নবদ্বীপের বরালঘাটের দিকে। সেখানে বাঁধানো পাড়ে ছড়িয়ে আছে রাত্রির বিস্ময়। নিঃশর্ত জিজ্ঞাসার মতো চারকোল সকাল। একটা ঘাসফুল মাথা কুটে মরে মূক যন্ত্রণায়। আর মোম হয়ে যায় মেঘ আমার পরনে ছাই আর ছায়ার আলখাল্লা৷ নিজস্ব ঘুমে মশগুল হলে দেখি ভারমুক্ত স্বপ্নপথে ভেসে যায় চিতাকাঠ -- আমার অবিশ্বাসের ইমপ্রিন্ট। চোখে লবণ, অলিন্দের উপর কাঁপছে অপুর অবয়ব... 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উৎসব সংখ্যা -২০২৩ প্রচ্ছদ শিল্পী - রিন্টু কার্যী সম্পাদক- শৌভিক বনিক

  উৎসব সংখ্যা -২০২৩ প্রচ্ছদ শিল্পী - রিন্টু কার্যী সম্পাদক- শৌভিক বণিক উৎসবের আর মাত্র কয়েকটা দিন, একদম হাতে গোনা।  আর উৎসব  সংখ্যা ছাড়া উৎ...