বাবার নোংরা জামাকাপড় তাহলে কাচবে কে
এবং সেটা ছিল সংক্ষিপ্ততম একটা সাক্ষাৎ এবং সম্পূর্ণ আবেগবর্জিত। আবেগ বর্জনটা ছিল আমাদের দুজনের দিক থেকেই। শুধু ফিরবার আগে ওর মেয়ের মাথায় হাতের পাঁচটা আঙুল বুলিয়ে আমি বলেছিলাম, মনে রেখ সেসব কথা যা গত কদিন ধরে আমাদের মধ্যে হয়েছে।
জবার সঙ্গে আমার
পরিচয় হয়েছিল বছর
দুয়েক আগে যখন
জবা ওর প্রথম
ভালবাসার বিয়েটা ভেঙে
ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন, নিজেদের বাড়িতে
ফিরে এসেছিল কোলে
ছমাসের একটা ফুটফুটেকে নিয়ে।
বাড়ির অমতেই প্রচুর ঝুটঝামেলির অন্ত করে সায়ন্তনকে বিয়ে করেছিল ও, মাত্র দশদিনের পরিচয়েই, যদিও পরিচয়টা দশ বছরের হলেই বা কী হত, এমন প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে। জবা ভেবেছিল সায়ন্তনকে আবিষ্কার করার উত্তেজনা পোহাতে পোহাতেই অনেকগুলো বছর আনন্দেই কাটাতে পারবে ও, ভাবেনি যে সব আবিষ্কারই 'ইউরেকা' হয়না।
এরপর থেকেই জবার চিন্তা-ভাবনায় একটা অভাবনীয় উলোটপালোট ঘটতে শুরু করবে আর সেজন্য আমারও কিছুটা ভূমিকা রয়েছে। বিয়ে সম্পর্কে মেয়েদের মধ্যে যে মেয়েবেলা থেকেই একটা রোমান্টিক ধারণা গড়ে উঠতে থাকে, একটা আজব স্বপ্ন ডালপালা ছড়িয়ে ক্রমশ আকাশের দিকে উঠে যেতে থাকে, সেটাকে ওর জীবনের অভিজ্ঞতা এবং চারপাশের ঘটনাবলীর থেকে আরও উদাহরণ টেনে টেনে টেনে চুরমার করে দেবার দায়িত্ব পালন করেছিলাম আমি। গত দুবছরে ওর সঙ্গে একাধিকবার আমার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে, জন্তুর মত নির্লজ্জ ও স্বাধীনভাবে মিলিত হয়েছি আমরা, আর আমি সতর্ক থেকেছি, জবাকেও পইপই করে সতর্ক যাতে কোনো আকাশকুসুম আমাদের মাঝখানে, আমি ওকে পরিষ্কার করেই বলেছিলাম যে খাঁচার মধ্যে ভালবাসা এক অলীক স্বপ্ন যা মানুষ দেখে কারণ নিজেদের শরীরী চাহিদাটাকে বেআব্রু করে দিতে সে তখন লজ্জা পায়। ফলে ওই অশরীরী শব্দটাকে যার নাম ভালবাসা, সামনে আনে। ব্যবহারিক জীবনে আমরা একে অন্যকে ব্যবহার করি মাত্র। এর বেশি কিছু নয়। খাঁচার মধ্যে ভালবাসা হয়না আর মানুষ তো নিজেকে পুরে দিয়েছে একাধিক খাঁচার মধ্যে মানুষ হবার অহমিকায়, যখন সে হৃষ্টপুষ্ট পুরীষ মাত্র। আ-বিশ্ব নগ্ন ভালবাসাকে পোশাকী খাঁচার মধ্যে খুন করেছে মানুষ, যদিও জীবন বয়ে চলে অন্যখাতে, অন্যভাবে।
মনে হয় নিজের অভিজ্ঞতা থেকেও জবা কথাগুলো বুঝতে শিখেছিল। বুঝেছিল যে পাশাপাশি দীর্ঘকাল বাস করলে বড়জোর যেটা জন্মায়, একটা মায়া, অন্যকিছু নয়। আর সেখানেও থাকে নির্ভেজাল স্বার্থচিন্তা। নিজেকে নিয়ে, নিজের বাঁচার তাগিদে। মৃত্যুর পরেও অন্যের মধ্যে বেঁচে থাকবার তাগিদে সে সন্তানের জন্ম দেয় আর বাঁচতে শুরু করে স্বকল্পিত একটা মিথ্যার মধ্যে। নিজের জীবনের মধ্যে বাঁচেনা মানুষ; সে বাঁচে তার তৈরি একাধিক মিথ্যার মধ্যে। এদিক থেকে বরং আমরা যাদেরকে মনুষ্যতর বলি, তারা অনেক সৎ তাদের প্রকৃতি-নিয়ন্ত্রিত জীবনে। ওরা ওদের জীবনের মধ্যেই বাঁচে কোনো মিথ্যার মধ্যে নয়। ফলে নতুন করে আরেকটা খাঁচা গড়তে চায়নি জবাও।
এজন্য আমিই জবার একমাত্র যৌনসঙ্গী ছিলাম না। অলোক নামের অন্য একটি ছেলেকেও ও ওর যৌনমানচিত্রে স্থান দিয়েছিল। আর এনিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো লুকোছাপা ছিলনা, জবা হয়ে উঠছিল চমৎকার একজন স্বাধীনচেতা মেয়ে যে কোদালকে কোদালই বলতে শিখেছিল। এ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। এবং এই বোঝাপড়াটা থাকবার জন্যই যেমন সার্ত্র ও সিমনের মধ্যে বড় ভালবাসা আর ছোট ছোট ভালবাসার সম্পর্ক অনেকটা, আমাদের সম্পর্কটা ছিল অটুট যেমনটা সিমেন্টের বিজ্ঞাপনে দেখায়। আমরা পরস্পরকে বিশ্বাস করতাম। কোনো মিথ্যার আড়াল ছিলনা। আজও নেই যদিও ঘটনার গতি দুজনকেই দুজনের থেকে অনেকবেশি দূরবর্তী করে তুলবে ক্রমশ।
এখন সেই ঘটনার গতি বিষয়ক আলোচনায় আমরা ঢুকছি পাঠক, এবং জানিয়ে রাখা ভালো যে জবাও এজন্য প্রস্তুত ছিলনা।
দীর্ঘকাল বিপত্নীক ও সেরিব্রাল অ্যাটাকে একটা দিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত অঘোরনাথ, ওর ৭৫ বছরের বৃদ্ধ জ্যাঠামশাই যাকে জবাই ফিরে এসে সেবাশুশ্রূষা করে খানিকটা সুস্থ করে তুলেছিল, তবে আগের মত হেঁটেচলে বেড়াবার জায়গায় পৌঁছাতে আরও কিছুটা সময় লাগবে, জবাদের ছিল যৌথ পরিবার, শৈশবেই মা-বাবাকে হারিয়েছিল জবা, ফলে অনেকখানি অনাদর ও অবহেলায় এখানেই বড় হয়ে উঠেছিল ও, কেবল অঘোরনাথের তত্ত্বাবধানে, আর ফিরে আসবার পরে ওর ঠাঁই হয়েছিল অঘোরনাথের ঘরের পাশেই। বাড়িতে আরও দুজন কাকু-কাকিমা ও তাদের ছেলেমেয়েরাও ছিল। ছিল অঘোরনাথের তিন মেয়ে ও দুই ছেলে, প্রত্যেকেই বিবাহিত, মেয়েরা বাইরে থাকলেও ছেলেরা একইসঙ্গে থাকত।
ঘটনার দিন জবা আমাকে পরে বলেছিল, পাশের শহরে ওদেরই কোনো এক মরণাপন্ন অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে বাড়িশুদ্ধ লোক চলে গেলে, জবার মেয়েটাও সেদিন অসুস্থ ছিল আর সবাই চলে গেলে অসুস্থ অঘোরনাথকে দেখবে কে, অতেব জবা থেকে গেল। বাড়ির বাকি লোকেরাও জবার এই বিবেচনায় খুশী হয়েছিল। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় ফুটফুটে কোলে জবার এই ফিরে আসাটা, ফেলতে না পারলেও, পছন্দ করেনি কেউই। তবে আশ্রয় জুটবার ব্যাপারে জবার ভাগ্য আরও একটা কারণে সুপ্রসন্ন ছিল আর তা হলো ওর ফিরে আসবার দিন কয়েক আগেই অঘোরনাথের অ্যাটাকটা হয়েছিল এবং হাসপাতাল ঘুরে প্রাণে বেঁচে ফিরলেও পক্ষাঘাতগ্রস্ত রুগিটির জন্য প্রয়োজন ছিল একজন সর্বক্ষণের শুশ্রূষাকারী নার্সের আর জবাকে তো মাইনেও দিতে হবেনা দুবেলা খেতে-পরতে দেয়া ছাড়া। এবং গন্ধে গন্ধে অলোকও ওইদিন এসেছিল ফাঁকা বাড়ির সুযোগ সেও ছাড়তে চায়নি। অলোক ছিল মজা মারা ধরনের একটা ছেলে, কোনো গভীরতা ছিলনা, জবা বলেছিল, পরে আমাকে।
মেয়েকে পাশেই অঘোরনাথের ঘরে ঘুম পাড়িয়ে জবা ও অলোক জবার ঘরেই নিজেদের যৌনবিছানা পেতেছিল, দুঘরের মাঝের দরজাটাও বন্ধ করবার প্রয়োজন বোধ করেনি কিংবা একটা দীর্ঘ মিলনের উত্তেজনায় সে খেয়ালও কারুর ছিলনা। শুধু ভেজানো ছিল মাত্র। অঘোরনাথ তো কারও সাহায্য ছাড়া হাঁটতেই তখনো।
টলতে টলতে এগিয়ে এলেন অঘোরনাথ তার দুবছর ধরে পঙ্গু শরীরটাতে তখন যেন একটা আস্ত হাতির বল। বাঁ হাতের প্রবল টানে বিছানা থেকে ছিটকে মেঝেতে পড়ে গেল অলোক। টপ টপ করে তরল বীর্য ঝরে পড়ছে অঘোরনাথের উত্তেজিত পুরুষাঙ্গ থেকে। অঘোর বাঁ হাতে খামচে ধরলেন জবার সুডৌল ডান স্তন...
সুদীপের এই নোটটা
আমি ওর ডায়েরিতে পেয়েছিলাম। ভদ্রমহোদয়গণ, আমরা
যারা এতক্ষণ এই
লেখাটার সঙ্গে হাঁটলাম, আমরা
প্রত্যকেই বোধহয় একবার
নিজেদের দিকে তাকাতে
পারি। তাকাবেন?
I am asking You & You & You.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন