শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩

গুচ্ছ কবিতা - শশাঙ্ক শেখর পাল





তথাকথিত অকথা


কবিতা বাড়ির জলসাঘরে ক্যাসিনো গোধূলি 

গাবগাছ পার করে সিঁড়ি

জুতো বদলাতে বদলাতে চোখে পড়ে জোনাকি

ভ্যানিটি থেকে দামি মোবাইল তালুতে জ্যান্ত ক‌ই

                          মাইরি ভেবেছিলাম দেশি 

                          আসলে জাপানি টুনি 


এসব খুব চল

যা চাক্ষুষ তাতেও হাজার মুখোশ

ভুতের বেগেও ডজন ডজন সর্ষে খেত

আস্ত মলের ওয়াল মাখামাখি ভারতবর্ষ 

তখন ভূত ভবিষ্যত অক্ষর নতুন গান্ধী নোটে বিক্রি

ময়ূরপুচ্ছ পরা বায়স অদ্ভুত ম্যাজিসিয়ান


জলের ট্যাঙ্কে বসে থাকা কাক 

ম্যগাজিনে পাতা ভর্তি কবিতা

শেলফে সাজানো ব‌ই সব নাটু-নাটু



ছানাপাখির রোজনামচা


খুব কাছাকাছি আছি শূন্য ব্যবধান 

সময়ে ধরছে দিনান্ত রঙের পেখম

সবুজ লুটোপুটির পর বাসন্তী ফুলের খামার 

সে সব পাতাবাহারী ঠেক ভেঙে

                       আমরা এক ফুল এক মালী

বহুদিন জল হয়ে মিশে আছি সাগরে


আকার বা নিরাকার

নির্দিষ্ট কোনো না কোনোভাবে আঁকতে চাইলে

মেরুদণ্ড গুঁড়িয়ে জল বর্ণ গন্ধহীন 

বাউল ভ্রমণ সার করেছি লেখালিখি ছলাকলায়

ব্যঞ্জনবর্ণে চাপা পড়া স্বরবর্ণ ছানাপাখির হাঁ ঠোঁট 

নেই ওড়াউড়ি খুঁটে খাওয়া


মেঘে মেঘে বিষণ্ন আড়ালে হাঁকে চাঁদের আলো

দ্রাক্ষাগাছে টুনি অক্ষর সোচ্চারে দোলে পিকনিক

মধ্যরাতে কবি আরও কবিতা-মাতাল 

এসেছি চলে যাবো বাঁকে পাকে ডাকে কৃষ্ণ বলয়

ছাই মাখা কলিজায় নিরুদ্দেশ তখন

কাঁচা মাটির ছাঁচে শব্দ‌ওয়ালা পিঁপড়ের সারি...


হাঁটে গোলকধাঁধা মাঠ পেরিয়ে আকাদেমি ভবন



স্বদেশ


স্বাধীনতার উৎসব পেরিয়ে প্রিয় স্বদেশবাসী

এসো আমরা গড়ে তুলি কথোপকথনের

                                                    লংরুট


গর্ভবতী জ্যোৎস্নার কাছে বলি

একটা কবিতা সন্তান দিও

                               তার আধো কথকতা

দামাল শিশুর চিহ্ন

ঘর মেঝে উঠোন ছাপিয়ে দেশ

আবার নতুন বর্ণে স্বপ্ন ও স্বদেশ


স্বাধীনতাকে প্রশ্ন নয়

তবু তার বাইরে চাওয়ার কিছু থাকে 

কালো স্রোত ও পাঁক আকির্ণ ভূমি আমার না

দাও বাসযোগ্য বিনির্মাণ

ধর্নামঞ্চশূন্য তারুণ্যের জয়গান 


বাংলার চাঁদমুখে মুখ রেখে চতুর্থ চন্দ্রযান



স্বাধীনতা


বাংলার চাঁদে জ্যোৎস্না ভেজানো স্বাধীনতা

বিপ্লবী শব্দ বিকল্পে

ক্ষুদিরাম মাঠে-ময়দানে রোমান্টিক পিকনিক

আপাতত এইটুকুই আমার অধিকার


ভারতবর্ষ কী অনেক দূর

লালকেল্লা

কদম কদম বাড়চ্ছে দরিদ্র সীমারেখা

যমদূয়ারে ন্যাড়া বেঁধে জিন্স কালচার

লড়াইয়ের গল্প ভুলে রং রুটে 

ফিরে যায় পনের‌ই আগষ্ট


তুমি ভেঁপু বাজাও

পায়রা ওড়ে সাতমহলা জুড়ে

অন্ধ-মেঘে ঘন হয় শকুনের পালক

বংশকৌলীন্যের গলিপথ কুয়ো পারে হাড়হীম 

নিম্নবর্ণ অভাগার ‌ক্ষতবিক্ষত লাশ

বিস্তির্ণ হোর্ডিং গিলে ফেলে অন্দরমহল

টিভি ও একঘন্টা কিচিরমিচির মোহে ডিজিটাল প্রিজম

পিছিলাবর্গ জাতীয় পতাকা হাতে শিশু মোনালিসা 

ছুট আর ছুট মাঠঘাট টিভি ও ছায়ায় ভার্চুয়াল 


ক্ষণ জন্মা প্রতিশ্রুতির গল্পে মায়াপিঠ 



দ্রৌপদীরা 


শহর বলো বা গাঁ-গঞ্জ আমার হাহা উপবাস

এদেশ একাল জুড়ে 

বেদনার চুপকথা মুঠো খুলে দাও ভ্রমর

সমস্বরে শুরু হোক মুক্ত কথোপকথন 

বর্ণমূল সু‍ঁইসুতোয় চেপে ফোটাক প্রতিবাদী অক্ষর 

সে দুপুরে তিস্তার কিং সাহেব ঘাটে পাছড়িয়ে 

                                 মজদুর আমাদের চড়ুইভাতি  

                                 

ধূধূ চরে চিত-কাক্ষে চোখের আয়নায় লাটাইয়ে বাঁধা মেঘ

মুঠো মুঠো বালি বাতাসে ছুঁড়ে দেয়

সেসব কবিতার তূণ বা বিমূর্ত ভাস্কর্য যাই হোক 

জানে কলের শ্রমিক চাষাভূষা ফিরে পাওয়া মুদ্রিত শব্দব্রহ্ম


মহা সমুদ্রের অক্টোপাস

টাইবাঁধা আন্তর্দেশীয় সবাই সূত্রধার 

মন্ত্রী আমলার গামলার মতো ভুঁড়ি 

চেটে চেটে খায় আমাদের স্বাধীনতা 


ছাপোষা মানুষ শিখে নেয় স্বপ্নের লক্ষ্যভেদ

পেঁজা তুলোর জোছনায় শত শত ক্ষেপণাস্ত্র

দ্রৌপদীরা নেমে আসে 

মণিপুর 

সারা ভারতবর্ষ থেকে আসুরদলনী মা ও মেয়ে 

তোমরাই লিখে দাও আক্ষরিক স্বাধীনতা 



একটি কবিতার জন্য


চড়কাবুড়ি 

পেঁজা তুলোর জোঁছনায় দাও শত শত ক্ষেপণাস্ত্র

কবিতার শব্দবন্ধে সসস্ত্র চেতনা

হলুদ পাতার বয়সকালে‌ও সে স্বপ্ন মেটেনি এখনো

বাংলার চাঁদ অন্ধকার দুপুরে গড়িয়ে দাও একটি কবিতা...


অক্ষর সুঁই সুতো বেঁধে সে এক ধুন্দমার শব্দবন্ধ


                              



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উৎসব সংখ্যা -২০২৩ প্রচ্ছদ শিল্পী - রিন্টু কার্যী সম্পাদক- শৌভিক বনিক

  উৎসব সংখ্যা -২০২৩ প্রচ্ছদ শিল্পী - রিন্টু কার্যী সম্পাদক- শৌভিক বণিক উৎসবের আর মাত্র কয়েকটা দিন, একদম হাতে গোনা।  আর উৎসব  সংখ্যা ছাড়া উৎ...