স্বপ্নফল
যেদিন জেনে গেছি একটা
স্বপ্নেরই পিণ্ডিফল এই আমি ।
সবুজ পাতায় মোড়া, ঝুলে
রয়েছি গাছের শাখায়,
বাতাসে দোলছি গাঢ় লাল
পাখিরা পাকা ফলে ঠোঁট
গলাচ্ছে
ঠোকরে ঠোকরে খাচ্ছে আমারই
হৃৎপিণ্ড ফল ।
আমি সেদিনই জেনেছি
পাখিজন্মে যারা নেচে উঠেছিল, আমারই মাতৃজঠরে
আমি তাদেরই ঠোঁটে জীবনরস চুইয়ে পড়েছি অনন্তের ফোঁটা ।
জীবন-বৃক্ষ থেকে কারো
স্বপ্নফল গলে গলে
এই আমি, আমারই জন্ম করেছি সার্থক তাঁর চাওয়া,
তাঁর তৃপ্ত
অহং গলে গলে পাখিদের ঠোঁটে ।
সাকার
জন্মসূত্রে এই দেহঘরে, আমি আমার সাকার পেয়ে
ছিলাম
এই ঘরে ঠাঁই-ঠিকানা হয়ে ছিল আমার
যখন সেই পরম সত্তার
প্রদীপ্ত আলো থেকে সহসা
ভ্রমণে বেরিয়ে এসে ছিলাম
আমি ।
ইতোমধ্যেই, আমি জেনে গেছি
পৃথিবীর আলো-ঝলমল
এই মনোমুগ্ধকর বাড়িতে আমার
আর বেশিদিন থাকা
চলবে না ।
রহস্যঘেরা এই গ্রহের বাসিন্দাদের প্রতিটি মুখে আমি তাকিয়ে দেখেছি
কারো দেহকোঠাতেই আমার দ্বিতীয় কোনো
ঠিকানা নেই !
কাঠখড়
কাঠগুলো পোড়াচ্ছি । আমার দেহের খড়কাঠ ।
আমার সাথে যতরকমের
জৈবিক সম্পর্ক-সংযোগ—
পায়ের গোড়ালি থেকে পিঠের
শিরদাঁড়া বেয়ে—
আমার মাথার খুলি— নিজের
ভেতর আগুন জ্বালাতে জ্বালাতে
যতটুকু জ্বলতে জানে ।
এই জঙ্গলটাতে যখন
আগুন আর ছাই নির্ভর বাতাস—
আমি পোড়াচ্ছি , উড়াচ্ছি নিজের জিভ,
কণ্ঠনালি, শ্বাসতন্ত্র
আমার মাথার চাঁদি
আমার জন্মগত উদ্যোগ—
উত্তরে— দক্ষিণে— সামনে— পেছনে—
হেঁটে যাচ্ছি
আমি ছাই-ছাই বাতাস
।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন