গদ্যের গল্পস্বল্প
'গদ্যের গল্পস্বল্প' অনুষ্ঠানটি নিয়মিত শুনেছিলাম বলেই আমি আজ গদ্য নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষার কথা ভাবি। কোন শব্দের পর কোন শব্দ দিয়ে বাক্য সাজাব এই নিয়ে আমার মধ্যে নানা ভাবনা চলতে থাকে নিরন্তর। একদা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের 'ছবির দেশে কবিতার দেশে' বইটি পড়তে গিয়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। খুবই ভালো লেগেছিল তাঁর এই গদ্যের ধরন। যে-গদ্য আমাকে টেনে নিয়ে যেতে পারে বহুদূর। ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল দেশ পত্রিকায় শীর্ষেন্দুদার 'হেমন্তের পড়ন্তবেলায়' নামের একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছিল। এ লেখা আমি প্রতি বছর হেমন্তকালে পড়ি। বলতে গেলে এ লেখা পাঠের মধ্যে দিয়েই আমার জীবনে হেমন্তকাল আসে। প্রতিটা শব্দ আর বাক্য লক্ষ্য করার মতো।
শুরুর দিকে আছে, "হেমন্ত মানেই রহস্যময়ী কুয়াশা, হিমের রাতে ভুতুড়ে আঁধার, দীপান্বিতায় আলোর উৎসব আর আকাশপ্রদীপ জ্বালানো।" এই যে 'জ্বালানো' দিয়ে বাক্যটি শেষ হচ্ছে, যা আমার খুবই ভালো লেগেছিল। আমি আলিপুরদুয়ার নিয়ে একটি লেখা লিখেছিলাম, যেখানে হাই স্কুল থেকে রেলব্রিজে যাওয়ার একটি প্রসঙ্গ আছে। লিখেছিলাম যে, দূরে খোলটা গ্রাম, রেজব্রিজে গিয়ে দাঁড়াতেই চোখ জুড়ত সবুজে। এই যে, 'সবুজে' দিয়ে বাক্যটি থামল, তা কিন্তু ওই 'জ্বালানো' শব্দটিরই পরোক্ষ প্রভাব! এই সব ভাবনাই গদ্য লেখার সময় আমাকে ঘিরে রাখে।
সম্প্রতি আমার একটি গদ্যার বই প্রকাশ পেয়েছে-- 'কিছুই হারায় না'। কখনও ভাবিনি আমার গদ্যের বই প্রকাশিত হবে। নীললোহিতের লেখাগুলো পড়ে এক সময় টুকরো টুকরো গদ্য লেখার আগ্রহ জন্মেছিল। এই বইয়ের লেখাগুলো আসলে এক ধরনের প্র্যাকটিস। আমি যদি কখনও বড় লেখা লিখি তাহলে এই বইয়ের লেখাগুলো হয়ে উঠবে সিঁড়ি...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন