জ্বর আক্রান্ত অকবিতা
(১)
তোমাকে দীর্ঘদিন না দেখলে জ্বর আসে, যন্ত্রণা হয়, রোদের বাগানে সারাক্ষণ পড়ে থাকি, তবুও ভেতরের হিম শীতলতা যেনো মৃত্যুর মতোন তোমাকে তাই আর কখনো দেখতে পাবো না, ফলে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হবো , চুম্বকীয় ধারণা পৃথক হবে শক্তিশালী লোহার খন্ড, ভালবাসার তীব্র আবেশী ব্যর্থ হবে আমি ঘুরপাক খেতে থাকবো তোমার চর্তুদিকে, তুমি কাঁচা হলুদ মাখবে সারা গায়ে, পায়ে লেপে দেবে আলতা, হাতে মেহেদী পাতায় গাঢ় নকশা, তাতে যেনো আমার মুখ স্পষ্ট হয়ে উঠবে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ছেঁড়া ও ফাটা,সম্ভবত আমাকে দেখতে পাচ্ছো না তুমি অদৃশ্য গানের আড়ালে ডুবে যাচ্ছে জ্বর আক্রান্ত সময়,
আমাদের পূর্ণবার মিলিয়ে দাও, হে দয়াময় আশ্চর্য ফুলের বনে...
(২)
কোথায় তুমি আমার হারিয়ে ফেলা বর্ষার কবিতা, নশ্বর এ জীবনের মানে তো শুধু তুমি, ভাগ্যের অদ্ভুত যাঁতাকলে পিষ্ট হতে হতে তোমাকে দেখছি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠা সুন্দরী দাঁড়িয়ে আছো আপেল বাগানে, ঘাসফুল গন্ধে ভরে যাচ্ছে দুপুর, দিঘীতে সাঁতার কাটছে রাজহাঁস অথচ আমি ভিজে যাচ্ছি পৃথিবীর বিষুবীয় রেখার দ্রাঘিমায়, তুমি অনুভব করতে পারছো না কালো সানগ্লাসের ভেতরে এতো জমকালো পৃথিবীকে দেখে ভাবছো, যিনি পৃথিবী আবিষ্কার করেছিলেন তিনি সত্যিই মহৎ ছিলেন, পাখিকে ফুল নদীকে পুরুষ ভেবে অবজ্ঞা করছো মেতে উঠছো পর-পুরুষ গন্ধে, অথচ এই সব আগুন নিয়ে খেলবার দিনের পূর্বে হারিয়ে ফেলেছো পুতুল খেলবার দিন,
পুতুলের বিয়ে ভেঙ্গে গেলো বলে করছো শোক তার গল্প কি মিথ্যাবাদী রাখালের মতোন, ভেঙ্গে ভেঙ্গে চূর্ণ বিচূর্ণ হবো কখনোই খবর নেবে না....
(৩)
আমাকে ভালবাসো তুমি নদীর স্রোত ও পাখিদের ভাষা শিখিয়ে দেবো, এই যে তোমার ভালবাসা পাবার জন্য প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি, নিজের ভেতরে প্রতিপালন করছি এক আয়ুর উদ্ভিদ এখন তার মৃত্যু হলে মৌমাছিরা ফুলের কাছে কি শর্তে গিয়ে দাঁড়াবে, আমি কোন মুখে গিয়ে দাঁড়াবো তোমার প্রতিমার পাশে, উপায়হীন কি করে জিজ্ঞাসা করবো, বহুবিধ অচেনা ফুল ও নারী স্বভাবের নাম, তুমি বুঝি শীত রাত্রিতে আগুনের কথা বলছো, আমার সংগ্রহে তো শুধু কাঠ, অথচ দূরের নগরে ফুরিয়ে গেছে উৎসব গীত ও নৃত্যের প্রয়োজন, অতিথিরা ফিরে যাচ্ছে মৃত কূপের ভেতর, বুকের অরণ্যের এখনো খোলা, প্রবেশ করো দেবশিশুরা খেলা করছে, পাখিরা গান গাইছে,
নদীরা উথাল পাথাল স্রোতে ভাসিয়ে নিচ্ছে আমাদের মানুষ জন্ম..
(৪)
কারো ডাকে সাড়া দেবোনা অথচ তোমার একটি মাত্র ডাক শোনার জন্য অপেক্ষা করছি সহস্র বছর, তুমি ডাকছো না বলে যেতে পারছিনা, আমার উজ্জলতাহীন মুখ মন্ডল আলোর ঝর্ণায় স্নান করতে ভালবাসে, আমার চোখ তোমাকে দেখবে বলে হৃদয়ের আহত অনুভব নিয়ে অনুউচ্চারিত তন্ত্র মন্ত্রের মতো জেগে থাকে আর শুনতে পায় পাথর ও ফুলের গোপন আওয়াজ, তোমার কথা শুনতে পায় না, বৃষ্টিতে ভিজে আমার হাহাকারগুলো কাঁদতে থাকে, তোমাকে ডাকতে থাকে নিঃশব্দে প্রার্থনায় এক কবি, এরপরেও তুমি কি আমাকে নদীর গল্প বলবে, মেঘের আড়ালে চাঁদের কথা বলবে,
আমি শুধু বলতে পারি এক জীবনের এতো ভালবাসা সঞ্চয় করো, এইসব সমস্ত কিছু ছাড়া আমার কিছু নেই.....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন