মাতৃভাষা
ও আমার মেয়ে !
ওর মা অফিসে চলে গেলে একা একাই খেলা করে
কারণ ওর দ্বিতীয় কোনো ভাই- বোন নেই ।
আমি বাসায় থাকি ;
এক প্রকার ওকে পাহারাই দিই ।
পৃথিবীকে দেখে রাখা গাছেরাই জানে
পাহারা দেয়া যেমন- তেমন সহজ কাজ নয় ।
আমি পাহারা দেবার ফাঁকে -
টেবিলের সামনে বসে মেয়ের খেলে যাওয়া
মূহুর্তগুলো খাতায় লিখছি ।
দেখি কী ভীষণরকম খেলে যাচ্ছে আমার মেয়ে
পূর্বসূরীদের কাছ থেকে আনা সমস্ত বর্ণমালাকে
উনুনে চড়িয়েছে রান্নার জন্য ;
তাও আবার তার রান্না আমাকেই খেতে হবে ।
স্বরবর্ণের মচমচে ভাজি
ব্যঞ্জনবর্ণের ঝোল তরকারি
আর গাণিতিক সংখ্যাগুলোর ভেতর রান্না করছে
পৃথিবী নামক ভুল গ্রহের কাবাব ।
তারপর এলফাভেটগুলো কোনোরকম
আধাসিদ্ধ করলো ভর্তার জন্য ।
আমি আমার মেয়ের এই খেলে যাবার দৃশ্যে
উপনীত হয়েই বুঝেছি ;
গুলিতে নিহত বরকত, সালাম, রফিক, জব্বার
তারা তাদের মেয়েদের হাতের রান্না -
খেয়ে যেতে পারেননি ।
কোনোরকম লালশাক আর
নোনাজল মিশানো খাবার খেয়েই -
মাকে আনতে মিছিলে গিয়েছিলেন,
আর আমাদের জন্য নিয়ে ফিরেছিলেন মাতৃভাষা ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন